মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

'বোতল হুজুর' কারা?



'বোতল হুজুর' কারা?
 
আমার মতে, যেসব ব্যাক্তি সুন্নাতি দাড়ি টুপি পরে রিজিকের ধান্দায় দ্বীনকে ব্যাবহার করে, স্বার্থের বিনিময়ে অত্যাচারী জালেম শাসকের দালালি করে এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করে তাদের বোতল হুজুর বলা হয়।
সৌদি বাদশাহ্‌এর পালিত হুজুর(s) 'মাদখালি/আহ্‌লে সৌদ' আতারি মার্কা হুজুরদের থেকে শুরু করে জালিম হাসিনা সরকারের পালিত আলেম(?) 'ওলামালীগ' সকলেই এই বোতল হুজুরদের অন্তর্ভুক্ত।

বোতল হুরু নামকরণের সার্থকতা ও যৌক্তিকতাঃ
ছবিতে দেখা যাচ্ছে বোতলের সাথে এদের ভীষণ মিল। শারীরিকগত মিল ও স্বভাবগত মিল।
ক. বোতলের মুখ ছোট কিন্তু পেট মোটা। বোতল হুজুরদেরও মুখ ছোট কিন্তু পেট মোটা। কারণ এরা এতো খায় যে অলস হয়ে গেছে।
খ. বোতল কেবল মাত্র নিজের ভেতরে কিছু আত্মসাৎ ছাড়া কিছুই পারেনা, বোতল হুজুররাও সবসময় নিজেদের পেটে কিছু ঢোকানোর ধান্দায় থাকে। নিজদের কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা।
গ. সৌদি আরবের উত্তোলিত তেলের ভাগ পায় বলে ওই তেল রাখার জন্য বোতল দরকার। আর সেই বোতল ওরা আমাদের কাছ থেকে কৌশলে আদায় করে। তেলের বোতলের সংগ্রহকারী। তেলের টাকা নিজের পেটে ঢুকায় এজন্য এরাই হলো প্রকৃত বোতল। এজন্য এদের নাম বোতল হুজুর।
বোতল হুজুর আমার দেওয়া নাম, এদের মুল নাম 'দরবারী আলেম', বা মাদখালি, বা আহ্‌লে সৌদ।

বোতল হুজুর চেনার ৮টি প্রধান উপায়ঃ
১। স্বার্থের কারণে দ্বীনকে ব্যবহার করবে। ইসলাম হবে তাদের রোজগারের পথ ও খ্যাতি অর্জনের মাধ্যম।
২। জেনে শুনে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়াত ও হাদিসের অপব্যখ্যা করবে। তাগুত/কাফির/জালিম/ফাসেক শাসকের কথামত চলবে, এক আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে শাসকদের অথবা তাদের শাস্তির ভয় করবে। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে ইসলামের সঠিক কথা বলবেনা।
৩। নিজের রাষ্ট্রের তাগুত/ফাসেক/জালিম অথবা কাফির শাসক যেভাবে চায় সেভাবেই ইসলামের কথা শোনাবে। শাসকদের পক্ষে ও সরকারবিরোধীদের বিরুদ্ধে কথা বলবে।
৪। প্রকাশ্য অথবা গোপন দালালি করবে, বিরোধিতাকারীকে তাকফির করবে অথবা খাওয়ারেজী বলবে। বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টি করবে।
৫। শাসকের চরম অপরাধটিকে দেখেও না দেখার ভান করবে এবং তার প্রশংসা করবে। অত্যাচারী শাসকের জন্য দোয়া করবে।
৬। যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় যুদ্ধ করে এবং সঠিক আকিদাহ পোষণ করে তাদের 'খাওয়ারেজি' এবং চরমভাবে গালাগালি করবে। ছোট খাটো বিষয় নিয় মুসলিমদের মাখে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে।
৭। বাহির থেকে দেখে এদের আকিদাহ বেশ শুদ্ধ মনে হবে কিন্তু ভেতরে ভেতরে জালিম শাসকদের দাসত্ব করবে। শাসকের অন্যায়ে বিরোধিতা করবেনা। শাসকের দেশে বিপ্লব ঠেকাতে এরে সব ধরনের চেষ্টা করবে। শাসকরাও এদের প্রচারনায় বাধা দিবেনা বরং সাহায্য করবে।
৮। এরা প্রথমেই সুন্নাহ্‌ ও বিদআত নিয়ে আলোচনা করে মানুষকে আকৃষ্ট করে এরপর ইসলামের সাথে ধোঁকাবাজি করে। এদের চেহারা অনেক নূরানি হয়ে থাকে এবং সুন্দর দাড়ি থাকে কিন্তু ভেতরে চরম দালালি।

বোতল হুজুরদের নিজস্ব মিডিয়া থাকতে পারে। লক্ষ্য করুন, সামান্য হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের সত্য খবর প্রকাশ করার জন্য আমাদের দেশে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ হয়ে যায়ে অথচ কাফিররা এসব বোতল হুজুরদের আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো বন্ধ করে দেয়না কারণ কাফিররা জানে বোতল হুজুরেরা যে ইসলামের কথা বলে তা কুরআন হাদিসের ইসলাম নয়। এগুলো হচ্ছে ইউএসএ এর ইসলাম বিরোধী সংস্থা ইউএনও এর ল্যাবরেটরিতে তৈরি ইসলাম। যার কারণে আমেরিকাও এসব বোতল হুজুরদের বিখ্যাত করার জন্য সাহায্য করে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল তাদের সাক্ষাৎকার এবং অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দেয় যাতে তারা মানুষকে "ইউএনও এর ল্যাবরেটরিতে তৈরি ইসলাম" প্রচার করতে পারে।
তারা বিভিন্নভাবে মানুষকে সারাদিন "কোথায় হাত বাধতে হবে, মাহযাব মানা যাবে কিনা, সুরা ফাতিহার পর আমীন বলতে হবে কিনা, রফুলে ইয়াদিন পালন করা যাবে কিনা" এসব অতি ছোটখাট এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে মাসলা মাসায়েল দিয়ে এমন বিভ্রান্তির মাঝে ফেলে যাতে মানুষকে জ্বিহাদ বিমুখ হয়। এটা সরাসরি আমেরিকার চক্রান্ত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বেশ কিছু বোতল হুজুর এমনভাবে বিখ্যাত হয়ে গেছে যে এদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই "বেনামাজি মুসলিমরাও" গালি দিবে। কারণ অধিকাংশ মানুসই এখন বোতল হুজুরদের তাকলিদ (অন্ধ অনুসরণ) করা শুরু করে দিয়েছে। বোতল হুজুরেরা কিছু বললে তা যাচাই ছাড়াই মানুষ বিশ্বাস করে নেয়। অর্থাৎ এখানেও পীর তন্ত্র চলে এসেছে। প্রতিটি বোতল হুজুরই ছুপা পীর।

কিছু বোতল হুজুর চরমভাবে হাদিস ও কুরআন এর ব্যখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার ও অপব্যখা করে। বিশিষ্ট একজন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় বোতল হুজুর ইতিমধ্যেই প্রমান করেছে "খিলাফাতের কোন প্রয়োজন নাই, সৌদির রাজতন্ত্রই হালাল ও সহিহ"!
পীরেরা যেমন বলে "জিসকা দো পীর হে উসকো দোন পীর দো ডানা পাকাড়কে বেহেশতমে লেজায়েগা"। আর এইসব বোতল হুজুরেরা বলে "বুকের ওপর হাত বাঁধো, রফুলে ইয়াদিন পালন করো, জোরে আমীন বলো, মাহযাবের ইমামদের মা বাপ তুলে গালি দাও আর মুজাহিদদের খারেজী বলো" তাহলেই বেহেশতো।

এই বোতল হুজুরদের শীর্ষনেতা হলো কাদিয়ানী (আল্লাহ্‌ তার ওপর লানত বর্ষণ করুন), যে কিনা নিজেকে নবী দাবী করেছিল। এই কাদিয়ানীই ইংরেজদের খুশি করার জন্য সর্বপ্রথম বলেছিল "নফসের জ্বিহাদ বওড় জ্বিহাদ"। আফছস আজ আমরা না জেনেই এই কাফিরের ফতোয়ায় হাদিস বলে চালিয়ে দিই।
যারা বলে নফসের জ্বিহাদ বড় জ্বিহাদ, তারা আসলে কেউ মুসলিমই নয়। তারা হলো কাদিয়ানীর এজেন্ট।

সারাবিশ্বের মত আমাদের দেশেও বোতল হুজুর রয়েছে। এরা এদের রব শেখ হাসিনাকে বাঁচানোর জন্য হাদিস ও আয়াতের অপব্যখা করে। আমি নিজে একটি সংসদ অধিবেশনের সরাসরি সম্প্রচারে দেখেছি একজন মুনাফিক দাড়ি টুপি পরে কিভাবে হাদিস ও আয়াতকে বিকৃত করে প্রমান করে দিল "নারী নেতৃত্ব হারাম নয় বরং জায়েজ আছে" নাউজুবিল্লাহ। এদেরকে সবাই আমাদের দেশে "ওলামালীগ বলে চেনে"।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বোতল হুজুরেরা তাদের নিজ নিজ দেশের তাগুত সরকারকে খুশি করার জন্য, মোটা অংকের টাকা পাওয়ার জন্য, টিভিতে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ লাভের আশায়, জনপ্রিয়তার উদ্দেশে কুরআন হাদিসের অপব্যখা করে চলেছে। নূরানি চেহারা আর সুন্নাতি পোশাক নিয়ে এরা মানুষকে প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। তার মদ্ধে উল্ল্যেখ্যযোগ্য হলো সৌদি বাদশাহ্‌-এর দালালগণ যাদের অধিকাংশই মদিনা বিশ্ববিদ্যাল্য হয়ে পাশ করেছে অথবা ওখানেই শিক্ষকতা করছে।

বাংলাদেশে বোতল হুজুরদের এজেন্ট (মুরিদান) হলো আহ্‌লে হাদীছ নামক একটি ফিরকা। এদের অধিকাংশই সৌদি বাদশাহ্‌এর গোলামী করে আর মুজাহিদদের খারেজী বলে। হয়তবা ওইসব দরবারী আলেম বা বোতল হুজুদের ভণ্ডামি না বুঝেই তারা তাদের অনুসরণ করে চলেছে।
উল্ল্যেখঃ সকল আহ্‌লে হাদীছ একরকম নয়। আমি কুমিল্লার একটি আহ্‌লে হাদীছ আওতাধীন একটি এলাকা চিনি যারা নিজেদের আহ্‌লে হাদীছ পরিচয় দেয় ঠিকই কিন্তু সৌদির পা চাটেনা, রাজতন্ত্র চায়না বরং খিলাফাত চায়, তারা মাহযাব নিয়েও বাড়াবাড়ি করেনা এবং এরা জ্বিহাদপন্থী। এদের মাঝে থেকেই জেএমবি-এর মত শক্তিশালী মুজাহিদ গ্রুপ উঠে এসেছিল। আহ্‌লে হাদীছ পরিচয় দিলেও এরা মুলত সালাফি। সৌদি সালাফি এবং তথাকথিত আহ্‌লে হাদিস এক নয়। সুতরাং আহ্‌লে হাদীছ বলতেই সবাইকে আবার বোতল হুজুর বলে গালি দিবেন না।

বোতল হুজুরদের ব্যাপারে আমাদের করনীয়ঃ
বোতল হুজুরদের মুখোশ খুলে দেওয়া আমাদের জন্য কর্তব্য কারন বোতল হুজুরেরা হলো মুনাফিক। এসব মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সবচেয়ে নিম্নস্তরে। মুনাফিকদের ব্যাপারে সাবধান, কারণ কাফিরদের দ্বারা এতটা ক্ষতি ইসলামের হয়নি যতটা হয়েছে এইসব বোতল হুজুর/ আহ্‌লে সৌদ/ মাদখালি মুনাফিদকের দ্বারা হয়েছে।
এজন্য এদের থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ নাস্তিক ও কাফিরদের বোঝানো যায় কিন্তু এদের বোঝানো যায়না। তবে তারা যদি তাউবা করে চলে আসে তবে তাদের ক্ষমা করুন। এদের বিরুদ্ধে বেশি বেশি লিখতে হবে যাতে মানুষ এদের চিন্তা পারে, এদের ভণ্ডামি ধরতে পারে। এবং জ্বিহাদ শুরু হলে এইসব মুনাফিকদের আগে কল্লা ফালানো হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

বিঃদ্রঃ বোতল হুজুর চেনার ৮টি উপায়ের সাথে আপনার প্রিয় হুজুর(!) মিলে গেলে আমি দায়ী নই। তেলের বোতল দায়ী।
শেয়ার করে বোতল উন্মোচনের সাহায্য করুন

Jafran Hasan Shurjo হযরত আবু বাকরা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-যখন কিসরা পদানত হল তখন তাকে বলতে শুনেছি-কে তার পরবর্তী খলীফা? বলা হল-তার মেয়ে। তখন রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-সে জাতি সফলকাম হয় না, যাদের প্রধান হল নারী।
{সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২২৬২, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৬৮৬, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৫৯৩৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৯০৭}

ভাই এখানে দুর্বল হাদিস কোথায় পেলেন? এখানে বেশ কয়েকটা সহিহ হাদিসে একসাথে বলা হয়েছে। আর এই ব্যাপারে মুহাদ্দিস ইমামদের ফতয়াও রয়েছে।




বাবা ইরাকে তুমি ৫ বছরে ১০ লাখ মারছ। এই নাও তোমার মেডেল




হাতটা অনেক গরম




বেস্ট ফ্রেন্ড বুশের সাথে মদের আসরে আমিরুল মুমেনিন ও আহলে কিতাব অর্ধোলঙ্গ গার্লফ্রেন্ডের সাথে ভবিষ্যৎ আমিরুল মুমেনিন ও উম্মুল মুমেনিনরা



যারা জিহাদ করে তারা খারেজী। মার্কিন রশদদাতা সৌদি বাদশাহ আবুল্লাহ মুসলিমের বন্ধু, তার বিরুদ্ধে কথা বলা হারাম। (এটা হাদিসে আছে, যে হাদিস এর বিরুদ্ধে যায় তা সব জাল।) ইখওয়ানুল মুসলেমিন কাফির, হানফিরা বেদাতি, তাবলীগ কাফির, জিহাদিরা কাফির। শুধু আমি ভাল তার প্রমান আমিরুল মুমেনিন আবদুল্লাহ আমাকে পয়সাপাতি দেয়, আর কাউকে দেয়?- বাংলাদেশের আহলে সৌদের গুরু ১০০% সহিহ আকিদাধারী মতি ভাই





সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৩

চতুর্দশ নোট: হিন্দু বিদ্বেষী পোস্ট নিয়ে হেফাজতিদের অপপ্রচার


বাংলার স্বাধীন সুলতানদের যুগটিই বাংলার সর্বাপেক্ষা গৌরবময় যুগ। তখন বাংলা ভারতের বুকে স্বাধীন ও সর্বাপেক্ষা ধনী রাজ্য হিসেবে পরিচিত হয়। ইতিহাসের কথা যদি বলা হয়, সেক্ষেত্রে ইবনে বতুতার বই পড়লেই এসব জানা যাবে।
বাঙালী হিন্দুরা দাবি করতে চায়, তারা ব্রিটিশদের গোলামি করে বাংলার জাগরণ(!) ঘটিয়েছিল। এরকম অদ্ভূত সম্প্রদায় দুনিয়ার বুকে একটিও নেই, যারা মনিবের পা চেটে, মনিবের বিছানায় নিজেদের মা বোনদের পাঠিয়ে, দেশকে বিক্রি করে দিয়ে রেনেসার দাবি করে। বাঙালি হিন্দু যে কতটা নীচ, তা তাদের মূল্যয়ন দেখলেই বোঝা যায়। এদের পরাধীনতাপ্রিয় পা চাটা স্বভাবের জন্যই এরা ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি জাতির পায়ের তলায় আছে এবং থাকবে। এদের দ্বারা কখনো স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠিত হবেনা, যা বাঙ্গালী মুসলমানদের দ্বারা হয়েছে। কারণ বাঙ্গালী মুসলমান স্বাধীন সুলতানি আমলের ঐতিহ্য বহন করে, তারা ঈশা খাঁ, মজনু শাহ উনাদের উত্তরসূরী। আর কলকাতার হিন্দুরা বহন করে তাদের পিতামহীদের ব্রিটিশ উপপতিদের অবৈধ রক্ত, তারা তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পরাধীনতার বীজ বহন করে চলেছে।


আমার চতুর্দশ নোট: দস্তার রাজদরবারের হিন্দু বিদ্বেষী পোস্ট নিয়ে হেফাজতিদের অপপ্রচার, ‘ফল কি? বৃক্ষেই পরিচয়’

December 2, 2013 at 3:31pm


সম্প্রতি দস্তার রাজদরবারের পোস্ট নিয়ে ফতওয়া দিতে শুরু করেছে একদল হেফাজতি। তাদের দাবি, “দস্তার রাজদরবার যে কাজ করছে তা ইসলাম সম্মত নয়, ইসলাম এভাবে হিন্দু বিদ্বেষ ছড়াতে অনুমতি দেয় না” ইত্যাদি ইত্যাদি, এর জন্য তারা চুটকা দলিলও উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে যা মূলত বিভ্রান্তিকর এবং ধোকাবাজির নামান্তর।
বলাবাহুল্য, বুয়েটের সাবেক ছাত্র প্রকৌশলী দস্তার রাজদরবার ব্লগ-ফেসবুকে এক নতুন ইতিহাস রচয়িতার নাম, এতে কোন সন্দেহ নাই। সে যে বিষয়বস্তু দলিল-প্রমাণ সহকারে সবার মাঝে উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে, সেটা কওমী মাদ্রাসা পড়ুয়ারা কখনো কল্পনায় আনতে পারবে কিনা তা সন্দেহ (কথা তিতা হলেও ১০০ ভাগ সত্যি)।
এবার আসুন দেখি, ইসলাম কি কাফেরদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অনুমতি দেয় কিনা।

যিনি সবার সৃষ্টিকর্তা, এমনকি কাফেরদেরও সৃষ্টিকর্তা সেই আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের সম্পর্কে কি বলেছেন:

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধরা সর্ব নিকৃষ্ট ও নাপাক:
১) “নিশ্চয়ই সমস্ত প্রাণীর মাঝে আল্লাহ তায়ালার নিকট কাফিরেরাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা ঈমান আনেনি।” (সূরা আনফাল- ৫৫)
২) নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক বা অপবিত্র। (সূরা-তাওবাহ, আয়াত : ২৮)
আমার প্রশ্ন: এখন এই আয়াত শরীফের স্বপক্ষে কেউ যদি হিন্দুদের নিকৃষ্ট বা নাপাক বলে তবে কি ভুল হবে??

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধরা মুসলমানদের শত্রু, মুসলমানরা তাদের শত্রু:
১) নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদের শত্রু (সূরা বাকারার : ৯৮)
২) ‘তোমরা (মুসলমানরা) তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে প্রথমতঃ ইহুদীদেরকে অতঃপর মুশরিকদেরকে।’ (সূরা মায়িদা: ৮২)
আমার প্রশ্ন: এখন কেউ যদি তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে তার ফায়সালা কি??

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধদের সাথে কোন বন্ধুত্ব স্থাপন ও সম্পর্ক রাখা যাবে না:
১) “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করোনা। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা মায়িদা-৫১)
৩) “মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণ ব্যতীত কাফেরদিগকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে কেউ এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহ’র কোন সম্পর্ক থাকবে না ”(সূরা আল ইমরান: ২৮)
আমার প্রশ্ন: এখন যাদেরকে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা শত্রু বলেছেন, আমি বান্দা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করলে কি তা গুনাহ হবে না সওয়াব হবে? উদাহরণস্বরূপ: কারো বাবার শত্রুর সাথে কেউ কি কখন বন্ধুত্ব স্থাপন করে??

ইহুদী-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের ভক্ত হওয়া যাবে না, তাদের শ্রদ্ধা কিংবা প্রশংসা করা যাবে না
১) হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুকে ভক্তি বা শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে গ্রহণ করোনা।” (সূরা মুমতাহিনা-১)
২) মেশকাত শরীফে আছে, “কোন ফাসেক ব্যক্তির প্রশংসা করেলে, আল্লাহ তায়ালা এতটা অসন্তুষ্ট হন যে উনার অসন্তুষ্টির কারণে আরশ পর্যন্ত প্রকম্পিত হয়।”
তাহলে কাফেরের প্রশংসা করলে কি ভয়ঙ্কর অবস্থা হতে পারে?
আমার প্রশ্ন: যারা মুসলমান নাম দিয়ে পাপাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে মানছে তাদের কি অবস্থা হবে?

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধরা আমাদের ঈমান নষ্ট করতে চায় এবং এর জন্য সর্বদা চক্রান্ত করে:
১) মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তারা এটাই কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেইরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও।  (সূরা নিসা: ৮৯)
২) “ইহুদী-নাছারা তথা আহলে কিতাবদের মধ্যে অনেকেই প্রতিহিংসাবশতঃ চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদের কোন রকমে কাফির বানিয়ে দিতে।” (সূরা বাক্বারা-১০৯)
৩) মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ইহুদী-নাছারারা কখনো তোমাদের (মুসলমানদের) প্রতি সন্তুষ্ট হবে না যতোক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাদের ধর্ম গ্রহণ না করবে বা অনুগত না হবে।”  (সূরা বাক্বারা-১২০)
আমার প্রশ্ন: এখন আল্লাহ কথার স্বপক্ষে কেউ যদি হিন্দুদের ইসলাম বিরোধী চক্রান্ত তুলে ধরে তবে কি ভুল হবে??

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধরা সর্বদা অন্তরে মুসলিম বিদ্বেষী চিন্তা করে:
১) হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। [সূরা আল ইমরান: ১১৮]
২)  দেখ! তোমরাই তাদের ভালবাস, কিন্তু তারা তোমাদের প্রতি মোটেও সদভাব পোষণ করে না। আর তোমরা সমস্ত কিতাবেই বিশ্বাস কর। অথচ তারা যখন তোমাদের সাথে এসে মিশে, বলে, আমরা ঈমান এনেছি। পক্ষান্তরে তারা যখন পৃথক হয়ে যায়, তখন তোমাদের উপর রোষবশতঃ আঙ্গুল কামড়াতে থাকে। বলুন, তোমরা আক্রোশে মরতে থাক। আর আল্লাহ মনের কথা ভালই জানেন। [সূরা আল ইমরান: ১১৯]
৩) তোমাদের যদি কোন মঙ্গল হয়; তাহলে তাদের খারাপ লাগে। আর তোমাদের যদি অমঙ্গল হয় তাহলে আনন্দিত হয় আর তাতে যদি তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে সে সমস্তই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে। [সূরা আল ইমরান: ১২০]
আমার প্রশ্ন: হিন্দুদের অন্তরগত বিদ্বেষ কেউ যদি প্রমাণ সহকারে দেখিয়ে দেয় তবে কি গুনাহ হবে??

ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধদের বিরুদ্ধেই জিহাদ ফরজ করেছেন আল্লাহ:
১) “আর তাদের হত্যা করো যেখানেই তোমারা তাদের দেখা পাও, আর তাদের তাড়িয়ে দাও যেখান থেকে তারা তোমাদের তাড়িয়ে দিয়েছিল, আর উৎপীড়ন যুদ্ধের চেয়ে নিকৃষ্টতর। কিন্তু তাদের হত্যা করো না পবিত্র-মসজিদের আশেপাশে যে পর্যন্ত না তারা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে, কাজেই তারা যদি তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তবে তোমরাও তাদের সাথে লড়বে। এই হচ্ছে অবিশ্বাসীদের প্রাপ্য।”-সূরা আল বাক্বারাহ (১৯১)
২) নবীজির সময় কাফেরদের সাথে মুসলমানদের ২৭টি যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল, যার ৯টিতে নবীজি সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনাকারীর শাস্তি কি হবে?
১) স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা সূরা লাহাবে আবু লাহাবের ধ্বংস হবে বলে ঘোষণা দিলেন এবং তার ধ্বংস নিশ্চিত হলো।
২) বুখারী শরীফে স্পষ্ট করে কাফ বিন আশরাফ ও আবু র’ফের দুটি ঘটনা উল্লেখ আছে। কাফ বিন আশরাফ ছিল ইহুদী কবি, সে কবিতার মাধ্যমে নবীজির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করতো আর আবু র’ফে ছিল ইহুদী ব্যবসায়ী। সে বিভিন্ন এলাকায় কনসার্টের মত আয়োজন করে নবীজির বিরুদ্ধে গান-নাচ ইত্যাদির ব্যবস্থা করতো। (নাউজুবিল্লাহ) নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই সাহাবীগণকে বললেন: কে আছে ঐ ইহুদীকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে। তখন দুইজন সাহাবী ঐ দুই ইহুদীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করলেন।
৩) ১৯২৪ সাল পাকিস্তানের লাহোরে রাজপাল নামক এক কাফের নবীজির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে এক ‘রঙ্গীলা রাসূল’ নামক এক ব্যাঙ্গাত্বক বই লিখেছিল। এই রাজপালের মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল আলীমুদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি নামক এক নবী প্রেমিক। আলীমুদ্দিনকে যখন ফাসিকাষ্ঠে নেয়ার পর সে হেসে বলেছিল:
“আমাকে তাড়াতাড়ি ফাসি দাও, ফেরেশতারা আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে আসছে। আমি তাদের দেখতে পাচ্ছি।”
এখন আমার প্রশ্ন: নবীজির বিরুদ্ধে যে হিন্দুরা অপপ্রচার করছে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দিতে বলা হলে কি নাজায়িজ হবে?

হিন্দুদের তথা কাফিরদের দেশ থেকে বের করে দেয়া:
১) নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “হেজাজ থেকে সমস্ত মুশরিকদের বের করে দাও।” তাই করা হয়েছিল।
২) খাইবারে ইহুদিদেরকে রাখা হয়েছিল এই শর্তে যে, তাদেরকে যেকোন সময় বের করে দেয়া হতে পারে। সে মুতাবিক হযরত উমর রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু তাদেরকে পরবর্তীতে বের করে দিয়েছিলেন। নাজরানের খ্রিস্টানদেরকেও তিনি রাখেননি। (সূত্র: শিবলী নোমানীর লেখা ‘আল ফারুক’)
আমার প্রশ্ন: হিন্দুদেরকে কেউ যদি দেশ থেকে বের করে দিতে চায় তবে কি অনৈসলামিক হবে??

মূলত: পবিত্র কুরআন শরীফে কাফেরদের সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলার জন্য কাফেররা তা সহ্য করতে পারে না। কিছুদিন পূর্বে কাফেরদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল: পবিত্র কোরআন শরীফের যে ৭০০ আয়াত (তাদের ভাষায়) এ কাফেরদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে সেগুলো বাদ দিলে তারা মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে। (নাউজুবিল্লাহ)

কিন্তু কারা প্রকৃত সন্ত্রাসী:
১) ইহুদী-খ্রিস্টানারা প্রতিদিন ফিলিস্তিনি আফগানিস্তান ইরাকে লক্ষ লক্ষ মুসলমান মারছে তারাই প্রকৃত সন্ত্রাসী।
২) হিন্দুদের ভোটে জেতার উপায় হচ্ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা করা, যেটা নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কিন্তু তাদেরকে কেউ সন্ত্রাসী বলে না। মূলত: তারাই প্রকৃত সন্ত্রাসী।
৩) খোদ আমেরিকায় প্রতিদিন গড়ে ১০০ লোক নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করে মারা যায়, কিন্তু তাদের টেরোরিস্ট বলা হয় না। মূলত: তারাই প্রকৃত সন্ত্রাসী।
৪) বৌদ্ধরা প্রতিদিন থাইল্যান্ড, মায়ানমার, চীনে মুসলমান মারে কিন্তু এতে তাদের টেরোরিস্ট বলা হয় না। মূলত: তারাই প্রকৃত সন্ত্রাসী।

এবার আসুন দস্তার রাজদরবারের এই কাজের বিরুদ্ধে কেন লেগেছে হেফাজত??

১) দেখবেন হেফাজত অনলাইনে ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখির জন্য সবসময় নাস্তিকদের দায়ি করে। তাদের এই বক্তব্য যতটুকু ইসলামের জন্য, তার থেকে ঢের রাজনীতির জন্য। কারণ সবাই জানে, অনলাইনের ইসলাম বিদ্বেষী লেখালিখি মূল হোতা হচ্ছে হিন্দুরা এবং এভরি (ইসলাম বিদ্বেষী) নাস্তিক  ইজ এ চুপা হিন্দু। কিনতু তাদের কখনই এই কাজের জন্য হিন্দুদের দায়ি করতে দেখা যায় না। তারা আওমীলীগকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে এ জন্য তাদের সকল আন্দোলনের টার্গেট আওয়ামীলীগ। কিন্তু হিন্দু বা খ্রিস্টানরা ইসলাম বা দেশের বিরুদ্ধে কিছু করলে তারা তার বিরুদ্ধে কিছু বলে না। যেমন সম্প্রতি আওয়ামী সরকার টিকফা চুক্তির নামে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে, কিন্তু যেহেতু এর সাথে কাফের আমেরিকা জড়িত তাই তারা এর বিরুদ্ধে কিছুই বলেনি।
২) হিন্দুরা অনলাইনে নবীজির বিরুদ্ধে বললেও উল্টো হেফাজতকে হিন্দুপক্ষ নিতেই দেখা গেছে। যেমন সম্প্রতি সাথিয়ায় রাজীব সাহা নামক এক হিন্দু ফেসবুকে নবীজির বিরুদ্ধে বললে সাধারণ মানুষরা এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের বাড়িঘর পুরিয়ে দেয়। কিন্তু দেখা যায় সেই হেফাজতির উল্টো হিন্দুদের পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছে।(http://bangla.irib.ir/2010-04-21-08-29-09/2010-04-21-08-29-54/item/55244-পাবনায়-সাম্প্রদায়িক-হামলা-টিআইবির-উদ্বেগ,-অনেকের-ক্ষোভ)
৩) হেফজাতের গোড়া ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা। সেই দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে সরাসরি হিন্দুদের পক্ষে দালালি করা হয়। নিচের লেখাগুলোতে এর বহু দলিল প্রমাণ সহকারে পাবেন:
ক) www.facebook.com/notes/des-wa/ভারতের-দেওবন্দ-নিয়ে-দস্তার-রাজদরবারের-ঐতিহাসিক-স্ট্যাটাস-এবং-আমার-প্রথম-নোট/406460449483401
খ) www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-তৃতীয়-নোট-মোদি-ইস্যুতে-দেওবন্দে-ভাঙ্গন-প্রতারিত-সাধারণ-মুসলমান/407867649342681
গ) www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-চতুর্থ-নোট-দেওবন্দীরা-হলো-হিন্দু-মার্কা-মুসলমান/408272595968853
ঘ) www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-পঞ্চম-নোট-কাশ্মীরের-পরাধীনতার-কষ্ট-এবং-দেওবন্দী-রাজাকারদের-মুখোশ-উন্মোচন/409008552561924
ঙ) www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-৬ষ্ঠ-নোট-অখণ্ড-ভারত-নীতি-ভুল-প্রমাণিত-ইতিহাসের-কাঠগড়ায়-দেওবন্দী-মওলানারা/409344262528353
চ) www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-সপ্তম-নোট-তেঁতুল-হুজুরদের-তেঁতুল-দর্শন/410949602367819www.facebook.com/notes/des-wa/আমার-দ্বিতীয়-নোট-নরখাদক-নরেন্দ্র-মোদির-ইতিহাস-কি-মুসলমান-ভুলে-যাবে/406909432771836

ভারতে দেওবন্দ নামক যে বৃক্ষ হিন্দুদের দালাল হয়ে কাজ করছে, তার ফল হেফাজতিরা বাংলাদেশে যে হিন্দুদের হয়ে দালালি করবে এটাই স্বাভাবিক। আলতামাশের লেখা, ‘ঈমান দীপ্ত দাস্তান’ নামক বইয়ে হযরত সালাউদ্দিন আইয়ুবি রহমতুল্লাহি আলাইহির জীবন কাহিনীতে দেখা গেছে:  কাফেরদের এজেন্টরা মসজিদে মসজিদে ইমাম মুয়াজ্জিন সেজে কাফেরদের পক্ষে বলত, উদ্দেশ্য মুসলমানরা যেন জুলুমবাজ কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে। যেটা এখন হেফাজত-দেওবন্দীরা করছে। প্রকৃতপক্ষে যারা কাফেরদের পক্ষে বলছে, তারা কখনই মুসলমান হতে পারে না।



বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৩

যারা নবীজীর হেদায়েত বাদ দিয়ে স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ করতেছে





মুসলমান জাতির জন্য সব চাইতে একটি বড় দুঃস্বপ্ন, সবচাইতে বড় এক বিপর্যয়, সব চাইতে ভয়ানক এক অধ্যয়ের নাম হচ্ছে ওহাবী ফিৎনা | কুখ্যাত ইয়াজিদের উত্তরসূরি, এবং বৃটিশ সরকারের তিলেতিলে গড়ে তোল এক এজেন্ট হচ্ছে ওহাবী ফের্কার প্রতিষ্ঠিাতা ইবনে আব্দুলওহাব নজদী |

এতো ভয়ানক এই ফির্কা যেটা হাদীস শরীফে সরাসরি সতর্ক করা হয়েছে --
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ মুবারক করেন -->
" আমি নজদের জন্য কি করে দোয়া করবো ? কারন নজদেতো ভুমিকম্প ও ফিৎনার সৃষ্টি হবে , এবং এখানেই শয়তানী দলের উৎপত্তি ঘটবে |"

দলীল-
√ বুখারী শরীফ -২/১০৫১
√ মিশকাত শরীফ ৫৮২ পৃষ্ঠা- ইয়ামন ও শামের বর্ননা অধ্যায় !

এই কুখ্যাত শয়তান ইবনেআব্দুল ওহাব নজদী পরিচয় সম্পর্কে কিতাবে বর্নিত আছে --

" ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী ১১১৪ হিজরী মুতাবিক ১৭০৩ সালে আরবের নজদ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করে | তার পিতার নাম আব্দুল ওহাব | বড় ভাইয়ের নাম সুলাইমান | পিতা ও ভ্রাতা দুজনেই ওই সময় বিজ্ঞ আলেম হিসাবে খ্যাত ছিলেন | কিন্তু আব্দুল ওহাবের কনিষ্ঠ পুত্র ইবনে ওহাব অত্যন্ত উদাসীন ও গোঁড়া চরিত্রের অধিকারী ছিলো | সে তার পিতা ও ভ্রাতার মতের বিপরীত চলতো এবং প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধাচরণ করতো এবং মনগড়া নতুন মত প্রচার করে ফিৎনা পয়দা করতো | ১১৪০ হিজরী হতে এই নজদী ফিৎনার সৃষ্টি হয় | সে পবিত্র মক্কা শরীফ মদীনা শরীফের নিরীহ লোকদের পাইকারী হত্যা করে | হেরেমাইন শরীফাইনের বসবাস কারী স্ত্রী- কন্যা দের ধর্ষন করেছে | পুরুষদের দাস এবং মহিলাদের দাসীতে পরিনত করেছে | সাইয়্যিদ বংশের অনেককে শহীদ করেছে |এমনকি মসজিদে নববী শরীফের মূল্যবান সব বিছানা ও ঝাড়বাতি গুলো সে নজদে নিয়ে যায় | হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের মাজার শরীফগুলোকে এবং আহলে বাইত শরীফ উনাদের মাজার শরীফ গুলো ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে | এমনকি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওজা শরীফ ভেঙ্গে দেয়ার জন্য একদল নজদী অনুসারী উদ্যাত হলে আল্লাহ এক সাপ পাঠিয়ে তাদের হত্যা করলেন |"

দলীল--
√ ফতোয়ায়ে শামী
√ ইশয়াতে হক্ব
√ সাইফুল মাজাহাব
√ সাইফুল জব্বার

এই প্রসঙ্গে হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত কিতাব " রদ্দুল মুখতার " কিতাবে বর্নিত হয়েছে--

كما وقع في زماننا في اتباع عبد الوهاب الذين خرجوا من نجد وتغلبوا علي الحرمين وكانوا ينتحلون الي الحنا بلة لكن هم اعتقدوا انهم هم المسلمون وان من خللف اعتقادهم مشركون و استباعوا بذلك قتل اهل السنة و قتل علماء هم

অর্থ- যেমন আমাদের সময় সংঘটিত আব্দুল ওহাব নজদীর অনুসারীদের লোমহরর্ষক ঘটনা প্রনিধান যোগ্য | তারা নজদ থেকে বের হয়ে মক্কা মদীনার উপর অধিপত্য বিস্তার করেছিলো | তারা নিজেদের হাম্বলী মাজহাবের অনুসারি বলে দাবি করতো | আসলে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো, তারাই শুধু মুসলমান বাকি সবাই মুশরিক | এজন্য তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীদের হত্যা করা জায়িয মনে করেছে , এবং অনেক আলেম কে হত্যাও করেছে !"

দলীল-
√ রদ্দুল মুখতার-৩ খন্ড ৪২৭ পৃষ্ঠা - বাবুল বুগাত !

এছাড়া অনুরুপ বর্ণনা বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ " তাফসিরে সাবী " ৩ খন্ড ২৫৫ পৃষ্ঠায় ও বর্নিত আছে !

এই ইবনে ওহাব নজদীর কিছু কুফরী আক্বীদা --
* মুসলমান দের তুলনায় কাফিররা লা ইলাহা ইল্লাহ এর অর্থ ভালো জনতো ! ( কাশফুল শুবহাত ৩য় অধ্যায় ৭ পৃষ্ঠা )

* নবীজী মক্কা শরীফের নেককার কাফিরদের মূর্তি ভেঙ্গে অন্যায় করেছেন !( কাশফুল শুবহাত ২য় অধ্যায়)

* রওজা শরীফ জিয়ারত নিষেধ !

* ৬০৬ হিজরী হতে তার সময় পর্যন্ত সবাই কাফের !

* নবীগন রওজা পাকে জীবীত নন !

* চার ইমামের অধিকাংশ কথাই ভুয়া !

দলীল-- কিতাবুল আক্বায়িদ

এবার আসুন মূল আলোচনায় প্রবেশ করি ! দেওবন্দী মৌলবীরা এই নজদীর প্রতি কি ধারনা রাখতো সেটা দেখুন --->

(১) রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী বলেছে-
" মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর অনুসারী কে ওহবী বলা হয় | তার আক্বীদা ভালো ছিলো !"

দলীল-
√ ফতোয়ায়ে রশিদীয় ১/১১৯ - তাকলীদ অধ্যায় !

(২) শামসুল হক ফরিদপুরী লিখেছে --
" অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে আরব দেশে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নামক এক ধর্মীয় নেতা এবং রাষ্ট্রীয় নেতা গুজারিয়াছেন | ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হইলেও তিনি বেশ প্রভাবশালী ছিলেন আরব দেশে বেশ প্রভাব বিস্তার করিয়াছিলেন | অনেকগুলো সংস্কার মূলক কাজও তিনি করিয়াছিলেন !'

দলীল-
√ তাছাউফ তত্ত্ব ৩৮ পৃষ্ঠা !

(৩) মাসিক মদীনা পত্রিকায় লিখা হয়েছে --
" শায়েখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদি ছিলেন আরবের একজন সংস্কারক ( মুজাদ্দিদ) আলেম | ধর্মের নামে ভন্ডামীর বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন !"

দলীল-
√ মাসিক মদীনা- সেপ্টেম্বর,২০১০ সংখ্যা ! ৫০ পৃষ্ঠা !

একটু চিন্তা করুন, এই দেওবন্দী তাবলীগীরা এই কুখ্যাত ইবনে ওহাব নজদী কে মুজাদ্দিদের আসনে বসাইছে |এবার দয়া করে সবাই বিচার করেন ওহাবী ফের্কার ধারক বাহক কারা !


এই হলো আপনার আলেম ,যারা নবীজীর হেদায়েত বাদ দিয়ে স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ করতেছে 
 
 






  • Noor E Julfikar ei deobandi muhtamim asad nadan ei Hindu mohilar golami





  • Noor E Julfikar deoband madrasay shommelone soniya gandhir achol dhore golam style e jasse deobandi muhtamim




দস্তার রাজদরবার!!! ইসলাম বিরোধী পেইজ দেখলে বাবুনগরী কেদে উঠে, কিন্তু এই বই পড়লে কিংবা পড়ালে কি বাবুনগরীর মন কাঁদে না.................

দস্তার রাজদরবার আপনার লেখা পড়লাম (www.facebook.com/rajdarbaar/posts/668816566497075)। হিন্দুদের এক পেইজ দেখে নাকি বাবুনগরী কেদে উঠেছে, উত্তেজিত হয়েছে। কিন্তু ছবির বই পড়লে কিংবা পড়ালে কি বাবুনগরীর মন কাঁদে না.........

যেই হিফজুল ঈমান নামক বইয়ের ১২ পৃষ্ঠায় (লালদাগ কাটা অংশে) বাবুনগরীসহ তামাম দেওবন্দীদের গুরু মাও আশ্রাফ আলী থানভী বলেছে:
“নবীর যদি কিছু ইলমে গায়েব থেকেও থাকে তাহলে এতে তাঁর বিশেষত্ব কী? এমন ইলমে গায়েব তো সকল চতুষ্পদ জন্তু, পাগল ও শিশুরও আছে।” (নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক)

আসলে এই ধর্মব্যবসায়ী কওমী-দেওবন্দী কর্তৃক নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সা্ল্লামের অবমাননার কারণেই আজকে হিন্দুরা এই দুঃসাহস পেয়েছে।



মজার বিষয় লক্ষ্য করছেন, ফেসবুকে সবাই জানে এই কাজগুলো হিন্দুদের কাজ। অথচ হেফাজতিরা প্রচার করে নাস্তিকদের কাজ। কখনও ভুলেও হিন্দুদের নাম আনে না। কারণ এদের তীর্থভূমি দারুল উলুম দেওবন্দ এর রয়েছে হিন্দুদের সাথে ক্লোওজ দোস্তি







দেখুন খালেদা তেতুলের পাশে বলা সমস্ত হেফজতিরা। নিজেরাই পর্দার কথা বলে কিন্তু নিজেরাই পালন করে না






কওমী নেতা কথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে ‘আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা’ শীর্ষক একটি বই লিখেছিল। সেই বইতে লেখা হয়:
“.... রং বেরংয়ের পোশাক, লিপিস্টিক লাগানো, পুরুষের সাথে অবৈধ মেলামেশা, থিয়েটার নাটক করা, সভা সমিতি করা, রাজনৈতিক আসরে নামা, প্রকাশ্যে সভা সমিতিতে বক্তৃতা দেয়া আর বেশ্যাবৃত্তি করা। শুধু পেশাদারী বেশ্যা নয় অপেশাদার বেশ্যাবৃত্তি করা। .....” (আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা ১৩৪ পৃষ্ঠা, লেখকঃ শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক)
“..... ধন ও ঋণ (পজেটিভ ও নেগেটিভ) ব্যতীত কোন বস্তুর কল্পনা করা যায়না, ধন ঋণ যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, পদার্থের পরমাণু (এটম) পজিটিভ ইলেকট্রন ও নেগেটিভ প্রোটনের সমষ্টি। এ থেকে ইলেকট্রন বিচ্যুত করলে আর পরমাণুর অস্তিত্বই থাকে না। মানবও তাই। স্বাভাবিকভাবে নর ও নারী (ধন ও ঋণ) পরস্পর দর্শনে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়না একথা মানুষ অস্বীকার করলেও যুক্তিবাদী বিজ্ঞান তা মানতে প্রস্তুত নয়। দৈহিক মিলনের ফাঁক থাকুক আর না থাকুন, আর থাকলে তো কথাই নেই, আকর্ষণ এতো প্রবল ও তীব্র হয় যে, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, মুনি মোহন্ত, দরবেশ, কেউ আত্মসংবরণ করতে পারে না। ....” (আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা ১৩৪ পৃষ্ঠা, লেখকঃ শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক)

কিন্তু এবার দেখুন সেই শায়খুল হাদীস নিজে কি করছে????

নিজের বইয়ে নারী নের্তৃতের বিরুদ্ধে বললেও, নারীদের সভাকে পতিতাদের সভা বললেও, নারী-পুরুষের দেখা সাক্ষাৎকে হারাম বললেও, এ অনুষ্ঠানে গিয়ে সে নিজেকে কি প্রমাণ করলো?? নিজের ফতওয়াতেই নিজে ধরা!!









আরেক কওমী নেতা মুফতি আমিনী কি করে দেখুন: পরে না চোখের পলক!!!!





মোনাজাতে মুফতি আমিনী বলেন, ‘হে আল্লাহ, খালেদা জিয়াকে দেশকে খেদমত করার ক্ষমতা দান করো। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্ম ও ইসলামের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা থেকে দেশকে হেফাজত করো।’
মোনাজাতে বলা হয়, ‘হে আল্লাহ, তুমি চারদলীয় জোটকে শক্তিশালী করো। খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় যাওয়ার তৌফিক দান করো। খালেদা জিয়া ওমরাহ করতে যাচ্ছেন, তাঁর ওমরাহ কবুল করো’











আহারে শফী-বাবু নগরীরর গুরু আসাদ মাদানীর কি অবস্থা



















 আহারে শফী-বাবু নগরীর গুরু দেওবন্দীদের বার্ষিক মাহফিলের স্টেজে সব হিন্দু তেতুল









 আহারে শফী-বাবু নগরীর গুরু দেওবন্দীদের উপস্থাপিকাও এক হিন্দু তেতুল

বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

ত্রয়োদশ নোট: ক্বসীদায়ে শাহনেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি


আামার ত্রয়োদশ নোট: ক্বসীদায়ে শাহনেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি (ভবিষ্যতবাণী সম্বলিত এক আশ্চর্য কবিতা)

26 November 2013 at 18:02
ক্বসীদায়ে শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি - বিষ্ময়কর ভবিষ্যৎবাণী সম্বলিত এক কাশফ ও ইলহামের ক্বাসিদা। জগৎ বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আজ থেকে ৮৮৬ বছর পূর্বে হিজরী ৫৪৮ সালে মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে এক ক্বাসিদা (কবিতা) রচনা করেন। কালে কালে তার এ ক্বসিদা এক একটি ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেছে আশ্চর্যজনকভাবে। মুসলিম জাতি বিভিন্ন দুর্যোগকালে এ ক্বাসিদা পাঠ করে ফিরে পেয়েছেন তাদের হারানো প্রাণশক্তি, উদ্দীপিত হয়ে ওঠেছে নতুন আশায়। ইংরেজ শাসনের ক্রান্তিকালে এ ক্বাসিদা মুসলমানদের মধ্যে মহাআলোড়ন সৃষ্টি করে। এর অসাধারণ প্রভাব লক্ষ্য করে ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এ ক্বাসিদা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ কবিতাকে আরবী ও ফারসী ভাষায় বলা হয় ক্বাসিদা। ফারসী ভাষায় রচিত হযরত শাহনেয়ামত উল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সুদীর্ঘ কবিতায় ভারত উপমহাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের ঘটিতব্য বিষয় সম্পর্কে অনেক ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে।
-----------------------------
(আমার হাতে কবিতার বইটির একটি বঙ্গানুবাদের ফটোকপি আছে। বঙ্গানুবাদ বইটি আজ থেকে ৪৩ বছর আগের, মূল্য মাত্র ৩ টাকা। কবিতাটি মোট ৫৮টি প্যারায় বিভক্ত।)

(প্যারা: ১)
পশ্চাতে রেখে এই ভারতের
অতীত কাহিনী যত
আগামী দিনের সংবাদ কিছু
বলে যাই অবিরত

টীকা: ভারত= ভারতীয় উপমহাদেশ

(প্যারা: ২+৩)
দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে
তুর্কী মুঘলদের
কিন্তু শাসন হইবে তাদের
অবিচার যুলুমের

ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে
মত্ত থাকিবে তারা
হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা
তুর্কী স্বভাব ধারা

টীকা: দ্বিতীয় দাওর= ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মদ ঘোরি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর। মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা-ওলী আল্লাহ ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইনকানুন ও শরীয়তি আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন।
আর হাদীস শরীফেই আছে: যখন মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তখন তার উপর গজব স্বরূপ বহিশত্রুকে চাপিয়ে দেয়া হবে।


(প্যারা: ৪)
তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে
শাসন দণ্ডধারী
জাকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা
মুদ্রা করিবে জারি

ভিন দেশী: ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে


(প্যারা: ৫+৬)
এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে
ঘোরতর এক রণ
রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী
হইবে জাপানীগণ

শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে
মিলিয়া উভয় দল
চুক্তিও হবে, কিন্তু তাদের
অন্তরে রবে ছল

টীকা: বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরাত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

(প্যারা: ৭+৮)
ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ
আকালিক দুর্যোগ
মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম
হবে মহাদুর্ভোগ

টীকা: ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।


(প্যারা: ৮)
এরপর পরই ভয়াবহ এক
ভূকম্পনের ফলে
জাপানের এক তৃতীয় অংশ
যাবে হায় রসাতলে

টীকা: ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।

(প্যারা: ৯)
পশ্চিমে চার সালব্যাপী
ঘোরতর মহারণ
প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে
জীমকে আলিফগণ

টীকা: ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। জীম= জার্মানি, আলিফ=ইংল্যান্ড।


(প্যারা: ১০)
এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে
অতীব ভয়ঙ্কর
নিহত হইবে এতে এক কোটি
ত্রিশ লাখ নারী-নর

টীকা: ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ি প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।

(প্যারা: ১১)
অতঃপর হবে রণ বন্ধের
চুক্তি উভয় দেশে
কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর
টিকিবে না অবশেষে

টীকা: ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ‘ভার্সাই সন্ধি’ হয়, কিন্তু তা টিকেনি।

(প্যারা: ১২)
নিরবে চলিবে মহাসমরের
প্রস্তুতি বেশুমার
‘জীম’ ও আলিফে খণ্ড লড়াই
ঘটিবে বারংবার

(প্যারা: ১৩)
চীন ও জাপানে দু’দেশ যখন
লিপ্ত থাকিবে রণে
নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি
চালাবে সঙ্গোপনে

টীকা: নাসারা মানে খ্রিষ্টান

(প্যারা: ১৪)
প্রথম মহাসমরের শেষে
একুশ বছর পর
শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ
দ্বিতীয় সমর

টীকা: ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর, এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।

(প্যারা: ১৫)
হিন্দ বাসী এই সমরে যদিও
সহায়তা দিয়ে যাবে
তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন
সুফল নাহিকো পারে

টীকা: ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করেনি।


(প্যারা: ১৬)
বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে
অতিশয় আধুনিক
করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ
হাতিয়ার আনবিক

টীকা: মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে ‘আলোতে বকর’ যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র, অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে ‘আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।

(প্যারা: ১৭)
গায়েবী ধনির যন্ত্র বানাবে
নিকটে আসিবে দূর
প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে
প্রতীচীর গান-সুর

টীকা: গায়েবী ধনীর যন্ত্র রেডিও-টিভি

(প্যারা: ১৮+১৯)
মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’
‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়
গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে
আতাত সুনিশ্চয়
ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’
এবং দু’জীম ঘারে
ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড়
আনবিক হাতিয়ারে।

টীকা: প্রথম আলিফ= ইংল্যান্ড
দ্বিতীয় আলিফ=আমেরিকা
তৃতীয় আলিফ= ইটালি
দুই জীম=জার্মানি ও জাপান


(প্যারা: ১৯- এর শেষ)
অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম
ধ্বংসযজ্ঞ শেষে
প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ
দাড়াবে বিজয়ী বেশে

(প্যারা: ২০)
জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী
এই রণে ভয়াবহ
হালাক হইবে অগিণত লোক
ধন ও সম্পদসহ

টীকা: জাতিসংঘের হিসেব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।

(প্যারা: ২১)
মহাধ্বংসের এ মহাসমর
অবসানে অবশেষে
নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া
চলে যাবে নিজ দেশে

কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে
এদেশবাসীর মনে
মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ
বুনে যাবে সেই সনে

টীকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে, আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ এ। এই প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে।
ক) এই অঞ্চলের বিভেদ তৈরী জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।
খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে এই উপমহাদেশে লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন-ভাষা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে।

(প্যারা: ২২)
ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ
শঠতায় নেতাদের
মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে
দু’দেশেরি মানুষের

টীকা: দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পরে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।

(প্যারা: ২৩)
মুকুটবিহীন নাদান বাদশা
পাইবে শাসনভার
কানুন ও তার ফর্মান হবে
আজেবাজে একছার

টীকা: এই প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলমানদের ঝাণ্ডাবাহী কোন সরকার আসেনি। মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে ‘গণতন্ত্র’কে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এই গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে ‘আজেবাজে’ সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

(প্যারা: ২৪)
দুর্নীতি ঘুষ কাজে অবহেলা
নীতিহীনতার ফলে
শাহী ফর্মান হবে পয়মাল
দেশ যাবে রসাতলে

টীকা: সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।

(প্যারা: ২৫)
হায় আফসোস করিবেন যত
আলেম ও জ্ঞানীগণ
মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা
করিবে আস্ফালন।

(প্যারা: ২৬)
পেয়ারা নবীর উম্মতগণ
ভুলিবে আপন শান
ঘোরতর পাপ পঙ্গিলতায়
ডুবিবে মুসলমান

(প্যারা: ২৭)
কালের চক্রে ¯স্নেহ-তমীজের
ঘটিবে যে অবসান
লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের
ইজ্জত সম্মান


(প্যারা: ২৮)
উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার
হালাল ও হারামের
লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে
ইজ্জত নারীদের

(প্যারা: ২৯)
পশুর অধম হইবে তাহারা
ভাই-বোনে, মা-বেটায়
জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত
পিতা আর কন্যায়

(প্যারা: ৩০)
নগ্নতা আল অশ্লীলতায়
ভরে যাবে সব গেহ
নারীরা উপরে সেজে রবে সতী
ভেতরে বেচিবে দেহ

(প্যারা: ৩১)
উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে
পাপের বেসাতি পুরা
নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা
ইবলিস বন্ধুরা

(প্যারা: ৩২)
নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের
কমে যাবে আগ্রহ
ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা
দারুন দুর্বিষহ

(প্যারা: ৩৩)
কলিজার খুন পান করে বলি
শোন হে বৎসগণ
খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব
নাসারার আচরণ

(প্যারা: ৩৪)
পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও
নগ্নতা বেহায়ামি
ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর
গজব আসিবে নামি

(প্যারা: ৩৫)
ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম
বিধর্মীদের হাতে
হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ
ভাসিবে রক্তপাতে

(প্যারা: ৩৬)
মুসলমানের জান-মাল হবে
খেলনা- মুল্যহত
রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে
সাগর ¯্রােতের মত


টীকা: হাদীস শরীফে আছে: পাঁচটি কারণে পাঁচটি জিসিস হয়। “১) যদি যাকাত না দেয়া হয়, তবে অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি দেখা দেয়; ২) যদি মাপে কম দেয়া হয়, তবে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, ৩) যদি বেপর্দা-বেহায়াপনা বেড়ে যায়, তবে দুরারোগ্য ব্যাধি দেখা দেয়, ৪) যদি একেক জন একেক রকম ফতওয়া দেয়, তবে মতবিরোধ দেখা দেয়, আর ৫) যদি মুসলমানরা আল্লাহ তায়ালার সাথে যে ওয়াদা করেছিল, সেউ ওয়াদা থেকে দূরে সরে যায় (অর্থ্যাৎ কোরআন হাদীস থেকে দূরে সরে কাফেরদের আমল করে) তবে তাদের উপর গজব স্বরূপ বিদেশী শত্রু চাপিয়ে দেয়া হয়।”
বর্তমানে মুসমানদের উচিত কাফেরদের আমল থেকে তওবা করে হাক্বিকী মুসলমান হওয়া। তবেই মুসলমানদের বিজয় অত্যাসন্ন, যা আগামী পর্বগুলোতে বলা হবে ইনশাআল্লাহ।


(প্যারা: ৩৭)
এরপর যাবে ভেগে নারকীরা
পাঞ্জাব কেন্দ্রের
ধন সম্পদ আসিবে তাদের
দখলে মুমিনদের

টীকা: এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়।

(প্যারা: ৩৮)
অনুরূপ হবে পতন একটি
শহর মুমিনদের
তাহাদের ধনসম্পদ যাবে
দখলে হিন্দুদের

টীকা: ১৯৪৮ সালে মুসলিম সুলতান নিজামের অধীনস্ত হায়দারাবাদ শহরটি দখল করে নেয় হিন্দুরা। সে সময় প্রায় ২ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করে মুশরিক হিন্দুরা, ১ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করে, হাজার হাজার মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। শুধু নিজামের প্রাসাদ থেকে নিয়ে যায় ৪ ট্রাক সোনা গয়না।

(প্যারা: ৩৯)
হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে
চালাইবে তারা ভারি
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা
ক্রন্দন আহাজারি

টীকা: এখানে সমগ্র ভারতে মুসলমানদের ঘরে ঘরে যে হিন্দুরা নির্যাতন করছে সেই বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

(প্যারা: ৪০)
মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু
কাফেরের তলে তলে
মদদ করিবে অরি কে সে এক
পাপ চুক্তির ছলে

টীকা: বর্তমান সময়ে এই উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে, কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র ভারতে এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে, উদাহরণ আছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও।

(প্যারা: ৪১)
প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে
শীনে’র অবস্থান
পঞ্চাশতম অক্ষে থাকিবে
নূন’ও বিরাজমান
ঘটিবে তখন এসব ঘটনা
মাঝখানে দু’ঈদের
ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক
জালিম হিন্দুদের

টীকা: বর্তমানে এই সময়টি চলে এসেছে। এতদিন হিন্দুরা তাদের মুসলিম নির্যাতনের ঘটনাগুলো লুকিয়ে রাখত। কিন্তু এখন আর লুকানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। এখন সবাই এই জালিম হিন্দুদের জঘণ্য অপকর্মের জন্য তাদের ধিক্কার দিচ্ছে।

(প্যারা: ৪২)
মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে
পাইবে মুমিনগণ
ঝঞ্জারবেগে করিবে তাহারা
পাল্টা আক্রমণ

(প্যারা: ৪৩)
সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া
প্রচ- আলোড়ন
‘উসমান’ এসে নিবে জেহাদের
বজ্র কঠিন পণ

(প্যারা: ৪৪)
‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’
হাতে নিয়ে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে
ময়দানে যুদ্ধে

টীকা: এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। শনি ও বৃহস্পতিগ্রহ অথবা শুক্র ও বৃহস্পতি গ্রহের একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম অথবা এ সময়ে মাতৃগর্ভে যে যাতকের ভ্রুনের সঞ্চার ঘটে তাকে বলা হয় সাহেবে কিরান বা সৌভাগ্যবান। সেই মহান সেনাপতির উপাধি হবে ‘হাবীবুল্লাহ’।

(প্যারা: ৪৫)
কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর
গাজীদের পদভারে
ভারতের পানে আগাইবে তারা
মহারণ হুঙ্কারে

টীকা: আক্রমণকারীরা ভারত উপমহাদেশের হিন্দু দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং হিন্দু দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।


প্যারা-৪৬
পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে
এসব ‘গাজীয়েদ্বীন’
যুদ্ধে জিনিয়া বিজয় ঝাণ্ডা
করিবেন উড্ডিন

প্যারা-৪৭
মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ
ইরানী ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা
আনিবে হিন্দুস্তান

টীকা: হিন্দুস্তান সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের দখলে আসবে।

প্যারা-৪৮
বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন
ঈমানের দুশমন
অঝোর ধারায় হবে আল্লা’র
রহমাত বরিষান

প্যারা-৪৯
দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে
ছয় হরফেতে নাম
প্রথম হরফ গাফ সে কবুল
করিবে দ্বীন ইসলাম

টীকা: ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম যার প্রথম অক্ষরটি হবে ‘গাফ’ এমন এক হিন্দু বণিক ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখন বুঝা যাচ্ছে না।

প্যারা-৫০
আল্লা’র খাস রহমাতে হবে
মুমিনেরা খোশদিল
হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভুমে
থাকিবে না একতিল

টীকা: ভারত বর্ষে হিন্দু ধর্ম তো দূরে হিন্দুদের কোন রসম রেওয়াজও থাকবে না। (সুবহানাল্লাহ)

প্যারা-৫১
ভারতের মত পশ্চিমাদেরো
ঘটিবে বিপর্যয়
তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে
ঘটাইবে মহালয়

টীকা: বর্তমান সময়ে স্পষ্ট সেই তৃতীয় সমর চলছে। অর্থ্যাৎ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মুসলমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা যুদ্ধ করছে তথা জুলুম-নির্যাতন করছে। এই জুলুম নির্যাতন বা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধই একসময় তাদের ধ্বংসের কারণ হবে। এখানে বলা হচ্ছে মহালয় বা কেয়ামত শুরু হবে, যাতে পশ্চিমারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

প্যারা-৫২
এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ
পয়মাল মিসমার
মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু
নামটি থাকিবে তার

টীকা: এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। বর্তমানে মুছে যাওয়ার আগাম বার্তা স্বরূপ দেশটিতে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অর্থনৈতিক মন্দা চরমভাবে দেখতে পাচ্ছি।


প্যারা-৫৩
যত অপরাধ তিল তিল করে
জমেছে খাতায় তার
শাস্তি উহার ভুগতেই হবে
নাই নাই নিস্তার
কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড
দেয়া হবে তাহাদের
ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা
দাড়াবে না কভু ফের

টীকা: এখানে স্পষ্ট যিনি এই শাস্তি দিবেন তা হবে কুদরতি হাতে। আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে কুদরত = নবী রাসূলের ক্ষেত্রে মুজিজা = অলী আল্লাহ গণের ক্ষেত্রে কারামত। এখানে কাফিরদের শাস্তি কোন ওলী আল্লাহ কারামতের মাধ্যমেই দিবেন এটাই বুঝানো হয়েছে। এই শাস্তির কারণে নাসারা বা খ্রিস্টানরা আর কখনই মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না।

প্যারা-৫৪
যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস
করিল আপন কামে
নিপতিত শেষকালে সেই
নিজেই জাহান্নামে

প্যারা-৫৫
রহস্যভেদী যে রতন হার
গাথিলাম আমি তা --যে
গায়েবী মদদ লভিতে, আসিবে
উস্তাদসম কাজে।

প্যারা-৫৬
অতিসত্বর যদি আল্লা’র
মদদ পাইতে চাও
তাহার হুকুম তামিলের কাজে
নিজকে বিলিয়ে দাও।

টীকা: বতর্মানে সমস্ত ফিতনা থেকে হিফাজত হওয়ার একমাত্রা উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের-মুশরেক প্রণিত বিভিন্ন নিয়ম-কানুন হোক।

প্যারা-৫৭
‘কানা যাহুকার’ প্রকাশ ঘটার
সালেই প্রতিশ্রুত
ইমাম মাহদী দুনিয়ার বুকে
হবেন আবির্ভূত

টীকা: ‘কানাযাহুকার’  সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত’। যখন মিথ্যার বিনাশকাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন হযরত কোন ‘মাহদী’ বা ‘পথ প্রদর্শক’ উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে চলমান বাতিল ধ্বংস হবে।

প্যারা-৫৮
চুপ হয়ে যাও, ওহে নিয়ামত
এগিও না মোটে আর
ফাসঁ করিও না খোদার গায়বী
রহস্য--আসরার
এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ
‘কুনতু কানযাল’ সালে
(অদ্ভূত এই রহস্য গাঁধা
ফলিতেছে কালে কালে)

টীকা: কুনতু কানাযাল সাল’’ অর্থ্যাৎ আরবী হিজরী সন ৫৪৮ সাল মোতবেক ১১৫৮ সাল হচ্ছে এ ক্বাসিদার রচনা কাল। এটা আরবী হরফের নাম অনুযায়ি সাংকেতিক হিসাব। আরবী হরফের মান অনুযায়িী কাফ=২০, নূন=৫০, তা=৪০০, কাফ =২০, যা=৭, আলিফ=১, সর্বমোট-৫৪৮।

মূলত অলী আল্লাহ গন মহান আল্লাহ তায়ালা’র তরফ থেকে ইলমে লাদুন্নী নামক এক ধরনের বিশেষ জ্ঞান পেয়ে থাকেন। হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন সেই ধরনের একজন ওলী আল্লাহ। শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি উনার সেই ইলামে লাদুন্নী জ্ঞান এর কিছু অংশ প্রকাশ করেছেন।

(সমাপ্ত)